Skip to main content

জার্সি বদলে যাওয়া মনিকা চাকমাকে সবাই ভুলে গেছেন কি?


জার্সি বদলে যাওয়া মনিকা চাকমার খবর  এখন আর কেউ রাখে না। কারণ  মনিকা চাকমা পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছে। মনিকা এখন কনস্টেবল পদে পুলিশের চাকরি করে। আমরা সবাই এখন মনিকাকে পুলিশ হিসেবে চিনি। কিন্তু আমরা এটা মনে রাখলো না যে মনিকা একজন সেরা ফুটবলার ছিলো।
মনিকা ছিল বাংলাদেশের সুযোগ্য কন্যা ও বুক ভরা গর্বিত মেয়ে। এক সময় বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল লীগ হয়ে দেশ-বিদেশে গিয়ে ফুটবল খেলার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতো আর দেশ কাপায় তো।
 প্রথমে ডাক পায় অ-১৪ দলে। ওই দলের সবচেয়ে জুনিয়র প্লেয়ার ছিল মনিকাই। তাদের দলটি ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত এএফসির টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে তৃতীয় স্থান (কোচ ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক) এবং ফেয়ার প্লে ট্রফি জিতেছিল। ওই আসরে মনিকা গোল করেছিল তিনটি।
বাংলাদেশ হয়ে  অর্থাৎ নিজের দেশ পক্ষ হয়ে অর্জন করা মনিকার এই অবদান  আজ সবাই ভুলে গেছে। ভুল গেছে ফুটবল টিম, ভুলে গেছে বাংলাদেশ। 
রাঙ্গামাটির গর্বিত মেয়ে, আদিবাসী সকল সম্প্রদায়ের সম্মানের হাতিয়ার, প্রসংশনীয় এবং সিএইচটি সকল জাতির অহংকারের অস্তিত্ব   পিতামাতা ছাড়া মনিকার খবর রাখার মতো কেউ আছে কিনা আমি জানিনা।
- Mru Indigenous Blogger🌎 

ছবিঃ সাবেক ফুটবললার⚽ মনিকা চাকমা।
বর্তমানে পুলিশের কনস্টেবল। 



👇⚽ ফিরে দেখা মনিকার মন্তব্য ও ইতিহাস  রচনা 👇

‘মাস দুয়েক হলো পুলিশের চাকরিতে জয়েন করেছি কনস্টেবল পদে। আপাতত কর্মস্থল চট্টগ্রামের হালিশহরের পুলিশ লাইনে। পরিবারের সবাই খুব খুশি। বন্ধুরা তো ইউনিফর্মে দেখলেই ঠাট্টা করে ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ বলে ক্ষেপায়। এলাকার মুরুব্বীরাও সমীহ করে কথা বলে।’ ভয় পায় না? ‘ভয়ের কী আছে? পুলিশ জনতার বন্ধু, ভীতিকর কিছু না।
কথাগুলো মনিকা চাকমার। রাঙামাটির মেয়ে। আজ থেকে ছয় বছর আগে জাতীয় বয়সভিত্তিক দলের অন্যতম সেরা ফুটবলার। দাপটের সঙ্গে খেলেছিল বছর তিনেক। তারপরই হঠাৎ করেই যেন বেমালুম গায়েব হয়ে গেল মেয়েটি। এক সময় সবাই যেন ভুলেই গেল তার কথা। জনকণ্ঠের অনুসন্ধানে মাস দুয়েক আগে তার সন্ধান পাওয়া যায়। তারপর তাকে নিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ফুটবলে ফিরতে মরিয়া মনিকা’ শিরোনামে একটি সুদীর্ঘ ফিচার প্রকাশিত হলে দেশবাসী জানতে পারে তার হাল-হকিকত। মূলত ওই সময় তার অপরিণত বয়সের অপরিণামদর্শী- আবেগী-ভুল সিদ্ধান্ত এবং খেলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলাই তাকে ছিটকে ফেলে ফুটবল থেকে।
১৯ বছরের সুদর্শনা মনিকা ইন্টারভিউ দিয়ে পুলিশে চাকরি পায় কনস্টেবল পদে। মাস দুয়েক ধরে চাকরি করছে সে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে কম্পিউটার বিষয় নিয়ে পড়ছে প্রথমবর্ষে।
মনিকা জানতো পুলিশে যোগ দেয়ার পর এখানে মহিলাদের আলাদা ফুটবল দল গঠন করা হবে। সেক্ষেত্রে ফুটবলে আবারও ফেরার আশা ছিল। কিন্তু এখন পর্যাপ্ত ও দক্ষ মহিলা পুলিশ ফুটবলার না থাকায় ফুটবল দল গঠিত হয়নি। এজন্য বেশ হতাশ সে। ‘ফুটবল দল গঠিত না হলেও মহিলা হ্যান্ডবল দল গঠিত হবে। আমাকেও খেলতে বলা হয়েছে। তবে এ নিয়ে দ্বিধায় আছি। কারণ কোনদিনও খেলাটি খেলিনি, তবে দেখেছি। কিন্তু দেখা আর খেলা তো এক জিনিস নয়।’
গত ফেব্রুয়ারিতে জনকণ্ঠের মাধ্যমেই মনিকা জেনেছিল বাফুফে সভাপতির সেই ঘোষণা- এ বছরই মহিলা ফুটবল লীগ আবারও চালু হবে। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ‘এ আশাতেই বুক বেঁধেছি। ঢাকার কোন ক্লাব যদি আমাকে খেলতে ডাকে তাহলে অবশ্যই সাড়া দেব। তবে এক্ষেত্রে আমাকে আমার কর্মস্থল থেকে অনুমতি ও ছুটি নিতে হবে। আশাকরি সেটা পাব। আমি কখনও কোন ক্লাবের হয়ে খেলিনি এর আগে। শুধু জাতীয় দলে খেলেছি। তবে আনসারের হয়ে খেলেছিলাম একবার। তবে আনসার তো আর কোন ক্লাব নয়, সার্ভিসেস সংস্থা।’
পুলিশ ঘুষ খায় এ নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে। মনিকার জবাব, ‘ঘুষ সবাই খায়, দোষ কেবল পুলিশের হবে কেন? সব পুলিশ ঘুষ খায় না। ভাল পুলিশও আছে। আমি ভাল পুলিশই হতে চাই। পুলিশের সুনাম-ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাই।’ প্রতিদিন প্রায় আট ঘণ্টা ডিউটি করতে হয় মনিকাকে। তবে বাসা থেকে যাতায়াতে আরও ঘণ্টা দুয়েক লেগে যায়। কাজের ধরন সিকিউরিটিভিত্তিক। তল্লাশি বা অস্ত্র-বিস্ফোরকের সন্ধান। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার কি হলো? ‘পুলিশের চাকরির চাপে ঠিকমতো ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারছি না। মনে হয় শীঘ্রই বন্ধ করে দিতে হবে। তাই বলে পড়াশুনা ছাড়ব না। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব।’
পুলিশের চাকরি কেমন লাগছে? ‘ভালই। শরীর ফিট রাখতে আমাদের প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা পিটি-প্যারেড করতে হয়। ভারি অস্ত্র নিয়ে দৌড়াতে হয়। সালামি অনুশীলন করতে হয়। এভাবে সপ্তাহে ছয় দিন দুই বেলা করে। জরুরী প্রয়োজনে শুক্রবারে ছুটির দিনেও এসব করতে হয়।’

ডিউটি প্রসঙ্গে আরও যোগ করে মনিকা, ‘আমাদের পুলিশ ইউনিফর্মের মতো সিভিল ড্রেসেও ডিউটি করতে হয়। কুমিল্লা ও কক্সবাজারে গিয়েও ডিউটি করতে হয়েছে। ক’দিন আগেই রামুতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্যাম্পে গিয়ে দায়িত্ব পালন করে এসেছি। আমার কাজ ছিল শৃঙ্খলা বজায় রাখা। ওখানে রোহিঙ্গা শিশুদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে ভীষণ কষ্ট পেয়েছি।’
এখনও পিস্তলে ফায়ারিং করতে পারেনি মনিকা। তবে ফায়ারিং করেছে শটগান, রাইফেল, এসএমজি এবং গ্যাসগান নিয়ে। ‘অস্ত্র নিয়ে প্রথম ফায়ারিংয়ের দিন খুব ভয়ে আর সংশয়ে ছিলাম কিভাবে ফায়ার করব। এখন অনুশীলন করতে করতে সব স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আত্মবিশ্বাসও অনেক বেড়েছে।’ মনিকার পুলিশ-সতীর্থ এবং বসরাও জানেন সে যে একসময় জাতীয় মহিলা ফুটবলার ছিল। কিভাবে জানে? ‘গত ফেব্রুয়ারিতে জনকণ্ঠে আমাকে নিয়ে প্রকাশিত বিশাল ফিচার পড়েই সবাই জেনেছে।’ যখন ক্লাস ফাইভে পড়ে মনিকা (রাঙামাটির মঘাছড়ি প্রাইমারী সরকারী বিদ্যালয়), তখন ২০১০ সালে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু তার। সেবার তার স্কুল বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। দলের ক্যাপ্টেন ছিল সে। তারপর খেলে চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে। সেবার ওই আসরে হয়েছিল টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। তারপর ধাপে ধাপে উঠে এসে সুযোগ পায় জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে। প্রথমে ডাক পায় অ-১৪ দলে। ওই দলের সবচেয়ে জুনিয়র প্লেয়ার ছিল মনিকাই। তাদের দলটি ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত এএফসির টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে তৃতীয় স্থান (কোচ ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক) এবং ফেয়ার প্লে ট্রফি জিতেছিল। ওই আসরে মনিকা গোল করেছিল তিনটি।

 ⚽
এর দু’বছর পরই ২০১৪ সালে স্বীয় নৈপুণ্যে প্রজ্বলিত হয়ে অ-১৬ দলের অধিনায়ক হয়ে যায় মনিকা (এর মধ্যেই বাংলাদেশ আনসারের হয়ে ২০১৩-১৫ সাল পর্যন্ত খেলে)। ঘরের মাটিতে এএফসি অ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বের খেলায় অংশ নেয়।
এখন দেখার বিষয়, ফুটবলার থেকে পুলিশে পরিণত হওয়া মনিকাকে আবারও ফুটবলার হিসেবে মাঠে দেখা যায় কবে থেকে?


 মনিকাকে আবার ফুটবলে ⚽ দেখতে চাই 🌐

We want back Monika Chakma on the Sports of Football team.
-Mru Indigenous Blogger 

Comments

Popular posts from this blog

চিকিৎসা না করেও চিকিৎসার বিল নিচ্ছেন চিটাগং হেলথ পয়েন্ট হসপিটাল লিঃ/ভুক্তভোগী সজীব চাকমার অভিযোগঃ

চিটাগং হেলথ পয়েন্ট হসপিটাল লিমিটেড নামক একটা বেসরকারি হাসপাতালে রোগীকে চিকিৎসা না করেও অতিরিক্ত চিকিৎসার বিল নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন  রোগীর পিতা সজীব চাকমা। চিটাগং হেলথ পয়েন্ট হসপিটাল লিঃ   রোগীর পিতা সজীব চাকমার ফেসবুকের প্রথম পোস্ট তুলে ধরাহলোঃ         রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিউমোনিয়া আর জ্বর নিয়ে গত ০২/০২/২০২০ তারিখে ভর্তি করিয়ে ছিলাম। নিউমোনিয়া ভাল হলেও জ্বর গতকাল ০৬/০২/২০২০ পর্যন্ত ভাল না হওয়ায় ডাক্তাররা জ্বরের চিকিৎসা অপারগতা প্রকাশ করে চট্টগ্রামে রেফার করে😪😪 তাই গতকাল ০৬/০২/২০২০ রাত ১১টা থেকে আমার দেড় বছরের উচ্চোবী চাঙমার চিকিৎসার নতুন ঠিকানা এখন হেলথ পয়েন্ট হসপিটাল (প্রা) লিঃ চট্টগ্রাম। সবাই আমার মেয়ের জন্য আশীর্বাদ করুন🙏🙏🙏 ------------------------------------------------------   রোগীর পিতা সজীব চাকমা জানান, তিনি তার একমাত্র কন্যা সন্তান উচ্চোবী চাকমা, যার বয়স এখনো মাত্র দেড় বছর। জ্বরের সাথে নিউমোনিয়া হয়ে প্রথমত রাংগামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নেন। রাংগামাটি জেনারেল  হাসপাতালে উন্নত চি...

"মা" কাকে বলে? মায়ের জাত কিঃ মা মানে কি?

ছবিঃ ম্রো আদিবাসী  মায়ের জাত মানে সন্তানের স্বর্গ স্থান। মায়ের জাত মানে সন্তানের পৃথিবী। মায়ের জাত মানে সন্তানের আলো। মায়ের জাত মানে সন্তানের এগিয়ে যাওয়ার পথ প্রদর্শক। মায়ের জাত মানে নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ানো। মায়ের জাত মানে নিজে না ঘুমিয়ে সন্তানকে ঘুম পাড়ানো। মায়ের জাত মানে দশ মাস দশ দিন সন্তানকে গর্ভে ধারণ করা। মায়ের জাত মানে সন্তানকে সবসময় হাসি খুশিতে রাখার হাতিয়ার। মায়ের জাত মানে সন্তানের কোমলতা। মায়ের জাত মানে সন্তানের সুখ শান্তির জগৎ। মায়ের জাত মানে সন্তানের প্রথম শিক্ষক। মায়ের জাত মানে সন্তানের প্রথম ভাষা শেখার বই। মায়ের জাত মানে সন্তানকে সু-শিক্ষিত গড়ে তোলা। মায়ের জাত মানে স্বর্ণের চেয়েও দামী। মায়ের জাত মানে একবার হারিয়ে গেলে আর ফিরে না পাওয়া। মায়ের জাত মানে খেলার সাথী। মায়ের জাত  মানে কোমলপ্রাণ। "মা" চেয়েও সুন্দর ভুবন আর কিছুই হতে পারে না। "মা" চেয়েও ভালো মানুষ আর কেউ হতে পারে না। "মা" চেয়েও শিক্ষিত আর কেউ শিক্ষিত হতে পারে না। "মা" চেয়েও ভালো আদর সৌহাগ আর কেউ দিতে পারে না। আমাদের মা যতক্ষণ বেঁচে  থা...

নারীর স্বাধীনতা আর ক্ষমতায়ন নয় শুধু, তাদের ইজ্জতেরও মূল্যায়ন করি/Mru Indigenous Blog

 কাজ প্রায় একই, কিন্তু... অনেক সময় বনিনবনা না হলেই ধর্ষণ হয়ে যাই যা পেপার পত্রিকায় নিত্য দেখি। নারীর স্বাধীনতা আর ক্ষমতায়ন নয় শুধু, তাদের ইজ্জতেরও মূল্যায়ন করি। সম্মতিতে করলে ‘যিনা’ আর জোর-জবরদস্তিতে করলে ‘ধর্ষণ’। ওয়েস্টার্ন সভ্যতায় যিনাকে প্রমোট করা হয়। ফ্রি মাইন্ডে তারা ফ্রি সেক্স করে। এটা কোনো অপরাধ না। কিন্তু নারীর অনিচ্ছায় জোর-জবরদস্তিতে সেই একই কাজ করলে তা হয় Rape বা ধর্ষণ। এটা তাদের কাছে অন্যায়। এটার জন্য আন্দোলনও হয়। ‘মি-টু’ এর মতো ‘ধার্ষনিক বিপ্লব’ও হয়। কিন্তু ইসলাম? ইসলামের অবস্থান মূলত ‘যিনা’ বা adultery এর বিরুদ্ধে। ধর্ষণ বা Rape এর শরয়ি দণ্ডবিধিতে যিনার শাস্তির সাথে অতিরিক্ত হিসেবে জোর-জবরদস্তির শাস্তি, ত্রাসসৃষ্টির শাস্তি ইত্যাদি যুক্ত হয় মাত্র। সুতরাং ইসলাম উভয়টারই বিরোধিতা করে। এমন কঠোর বিরোধিতা যে, মুসলমানদের  কুরআন ঘোষণা করেছে- “লা তাকরাবুয যিনা” অর্থাৎ তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না।  দিনের পর দিন, বছরের পর বছর প্রেম হয়, চ্যাটিং হয়, ডেটিং হয়, শপিং হয় অসুবিধে নেই। পার্কের বেঞ্চে বসে কোলাকুলি হয়, গাছের আড়ালে পরম মমতাভরা আলিঙ্গন হয় এটাও অসুবিধে না। রাতের প...